শনিবার, ২৫ Jun ২০২২, ১০:১৩ অপরাহ্ন
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কোন নির্ভরযোগ্য মেডিসিন এখনো পাওয়া যায়নি কারণ এতে মৃত্যুর কারণ অনেকগুলো, তাই এক মেডিসিনে যেখানে কোন রোগী সেরে উঠছেন সেখানে আরেক রোগীর ওপর এর কোনই প্রভাব নেই। আবার ভ্যাকসিন কবে পাওয়া যায় সেটি নিয়েও সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে।
এ অবস্থায় ঊনবিংশ শতাব্দীর আদি এক চিকিৎসা পদ্ধতি প্লাজমা থেরাপিই ভরসা।
আমাদের কাছে এটি নতুন নাম মনে হতে পারে তবে প্লাজমা থেরাপি সবার আগে শুরু হয়েছিল ঊনবিংশ শতকে ডিপথেরিয়ার চিকিৎসা হিসেবে। প্লাজমা থেরাপি আর কিছুই নয় কোন অসুখ থেকে সেরে ওঠা মানুষের দেহে সেই রোগের বিরুদ্ধে যে এন্টিবডি তৈরি হয় সেই এন্টিবডি অসুস্থ ব্যক্তির দেহে ট্রান্সফার করা যেন সেই রোগের প্যাথোজেন (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি) এর এন্টিজেন এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এটিকে বলা হচ্ছে প্যাসিভ ইমিউনিটি অর্থাৎ রোগীর দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার একটি সাময়িক শক্তি যেন ভাইরাস অত শক্তিশালী না হতে পারে। এটি একটি প্রতিরোধী ব্যবস্থা, চিকিৎসা নয়। অর্থাৎ এর উদ্দেশ্য রোগীর রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা বাড়ানো।
এই প্লাজমা আসলে কি?
প্লাজমা হচ্ছে রক্তের জলীয় অংশ যার ৯০ ভাগই পানি। সাথে থাকে কিছু প্রোটিন আর রোগ বিরোধী এন্টিবডি যদি আপনি কোভিড এর মত কোন রোগে ভুগে সুস্থ হয়ে থাকেন।
যেহেতু এতে পানির পরিমাণই বেশি তাই বলা হচ্ছে মাত্র কয়েক ঘন্টায় হারানো প্লাজমার ঘাটতি দেহে পূরণ হয়ে যায়। এমেরিকান ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন এর তথ্যানুযায়ী একজন সুস্থ ব্যক্তি ৪৮ঘন্টার ব্যবধানে চাইলে সপ্তাহে দু’বার প্লাজমা দান করতে পারেন। ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশান এর তথ্যমতে প্রতি ২৮দিন অন্তর প্লাজমা দান করা যেতে পারে। একবার প্লাজমা দান করলে প্রায় ৮০০মিলি. এর মত প্লাজমা দান করা যায় যা দিয়ে গড়ে তিনজন ব্যক্তির জীবন বাচানো সম্ভব হতে পারে। এই প্লাজমা দানে আপনার কোন ক্ষতি হবেনা যেহেতু অতি অল্প সময়েই তা আবার আপনার দেহে তৈরি হয়ে যাচ্ছে আর এমনটাও নয় যে কাউকে এন্টিবডি দিলে আপনার এন্টিবডির ঘাটতি তৈরি হবে।
তাই অনুরোধ থাকবে আপনি যদি কোভিড সারভাইভার হয়ে থাকেন এবং উপসর্গহীন চৌদ্দদিন পার করে থাকেন; আপনি যদি ১৮থেকে ৬০বছর বয়সী পুরুষ হন বা প্রেগনেন্ট নন এমন নারী হন তবে অবশ্যই প্লাজমা দান করে কারো জীবন বাচাতে এগিয়ে আসুন। প্লাজমা গ্রহণের আগে আপনার যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে তাই আপনার বা গ্রহীতার ভয়ের কিছু নেই।